ইসরায়িলে ৯০০০ বছরের আগের রহস্যময় শহরের সন্ধান ।
ইসরায়েলে ৯০০০ বছরের আগের রহস্যময় শহরের সন্ধান ।
ছবি : সংগৃহীত
৯ হাজার বছর আগের একটি নগরের কথা জানা ছিল না
কারও। কিন্তু সম্প্রতি মাটি খুঁড়তেই বেরিয়ে এল সেই শহরের ধ্বংসাবশেষ। ধ্বংসাবশেষ
থেকে যা মিলল তাতে প্রত্নতত্ত্ববিদেরা হতবাক।
ইসরায়েলের প্রত্নতত্ত্ববিদদের দাবি, খননের পর এখন পর্যন্ত সামনে আসা নগরটিতে
জনসংখ্যা ছিল ২ থেকে ৩ হাজারের মতো। জেরুজালেম থেকে শহরটির অবস্থান ৫ কিলোমিটার
পশ্চিমে। এটি বর্তমানে মোৎজা শহরেই গড়ে উঠেছিল এ নগরী।
খননকাজে তত্ত্বাবধায়কের
দায়িত্বে থাকা প্রত্নতাত্ত্বিক জ্যাকব ভার্দি জানান, আসলে প্রত্নতাত্ত্বিক দিক থেকে ওই এলাকার গুরুত্ব অনেক দিন ধরেই
স্বীকৃত। তবে সাম্প্রতিক আবিষ্কার পুরো দক্ষিণ লেভান্ত জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে। তবে খনন
কাজের পর খোঁজ মেলা শহরটি অনেক বড় ছিল। দক্ষিণ লেভান্ত বলতে ইসরায়েল, ফিলিস্তিন, জর্ডান, দক্ষিণ লেবানন ও দক্ষিণ সিরিয়ার বৃহত্তম এলাকাকে বোঝায়।
প্রত্নতত্ত্ববিদদের তথ্য
মতে, বাড়ি বানানোর জন্য যে প্লাস্টার
ব্যবহার করা হয়, তা বানাতে অত্যন্ত দক্ষ ছিলেন ওই
শহরের কারিগরেরা। আর দুটি বাড়ির মধ্যে সমান্তরালভাবে সড়কের যে ব্যবস্থা রাখা
হয়েছিল, তাতে উন্নত নগর-পরিকল্পনার ছাপের প্রমাণ
মেলে। বিভিন্ন জায়গায় গুদামে বীজ সংরক্ষণ করে রাখার প্রমাণও মিলেছে। এর মানে হলো এ
অঞ্চলে কৃষিকাজ চলত। তিরের ফলা থেকে বিশেষজ্ঞদের আন্দাজ, পশু শিকার নির্ভর জীবনযাপন করতেন মৃত ওই নগরীর লোকজন। পাশাপাশি পশুদের
হাড়ের অবশিষ্টাংশ থেকে সে যুগে পশুপালনের প্রমাণও মেলে।
জ্যাকব ভার্দির দলের দাবি, ওই শহর থেকে বিভিন্ন যন্ত্রপাতির সন্ধান মিলেছে। যা থেকে এটা বোঝা যায়
যে অস্ত্র তৈরিতে রীতিমতো দক্ষ ছিলেন বাসিন্দারা। ছুরি, কুঠার তো বটেই, ছিল প্রসাধনের জন্য
ব্যবহৃত গয়না তৈরির মতো সূক্ষ্ম হাতের কাজের পারদর্শিতাও। এর প্রমাণ হিসেবে মিলেছে
ছুরি, পাথরের ব্রেসলেট, বিভিন্ন ধরনের পাথরের তৈরি পুতুলসহ নানান পণ্য। বাইরের জগতের সঙ্গে যে
এ শহরের বাণিজ্যিক সম্পর্কও ছিল তা মোটামুটি নিশ্চিত প্রত্নতত্ত্ববিদেরা। সব
মিলিয়ে এ আবিষ্কারকে ‘যুগান্তকারী’ বলে মনে করছেন তাঁরা। এর আগে জেরুজালেম থেকে যে সবচেয়ে পুরোনো
ধ্বংসাবশেষটির সন্ধান মিলেছিল, সেটি ছিল ৭ হাজার বছর
আগের। সেদিক থেকে দেখলে এই সাম্প্রতিক আবিষ্কার আরও অনেক পুরোনো।
জ্যাকব ভার্দি বলেন, এখানকার বাসিন্দারা মৃত ব্যক্তিকে সমাধিস্থ
করতেন। এর প্রমাণও খননের পরই মিলেছে। সমাধিগুলো সজ্জিত করা হতো। এর অর্থ হলো
ধর্মীয় বিশ্বাসে তারা এসব করতেন।
তথ্যসূত্র : প্রথম আলো ।
No comments
please don't avoid to do the comments.